Wellcome to National Portal
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৬ জুন ২০২১

ড্রাফট ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫)

প্রকল্পের পটভূমি ও উদ্দেশ্যঃ

পরিকল্পিত নগরায়ন, আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং পরিবেশগত টেকসই উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ADB), জার্মান উন্নয়ন সংস্থা (KFW) এবং বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় "নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প” (City Region Development Project) শীর্ষক প্রকল্পটি বিগত ০২-০৮-২০১১ তারিখে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ১৩০৫.৬৩ কোটি টাকা (জিওবি ৩৪৯.৪১ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৯৫৬.২২ কোটি টাকা) প্রাক্কলিত ব্যয়েজুলাই ২০১১ হতে ডিসেম্বর ২০১৬ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। রাজউক অংশের জন্য বরাদ্দকৃত টাকার পরিমান ২৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা মাত্র।প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় লীড সংস্থা এলজিইডি এবং সহযোগী সংস্থা হিসেবে রাজউক, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, খুলনা সিটি কর্পোরেশন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন পৌরসভা এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

 

১৯৯৫ সালে প্রণীত স্ট্রাকচার প্ল্যানের মেয়াদ ২০১৫ সাল পর্যন্ত। সেকারণে ২০১৬ সালের পূর্বেই যেন ২০ বছর মেয়াদী ঢাকা স্ট্রাক্চার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫) প্রণয়ন সম্পন্ন হয় সেজন্য রাজউক কর্তৃক আরডিপি এর প্রধান কম্পোনেন্ট হিসেবে Review of Dhaka Metropolitan Development Plan (DMDP) and Preparation of Dhaka Structure Plan for the Period of 2016-2035 এর উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়।

 

ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫) এর মূল ভাবনা ও বৈশিষ্ট্যঃ

ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান মূলতঃ একধরনের কৌশলগত পরিকল্পনা। এটি দীর্ঘমেয়াদে মহানগরীর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেক্টরের নীতিনির্ধারনী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এই প্ল্যানে “স্থানীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোকে অক্ষুন্ন রেখে ও টেকসই পরিবেশের নিশ্চয়তা বিধান স্বাপেক্ষে ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য, কার্যকর এবং দূর্যোগ প্রতিরোধক্ষম মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলাসম্বলিত সামগ্রিক রূপকল্প বাস্তবায়নে স্বাশ্রয়ী বাসস্থানের সহজলভ্যতা, স্বাশ্রয়ী ও আকর্ষনীয় গণপরিবহনের ব্যবস্থা, কর্মসংস্থানের সুযোগ, গণপরিসর ও উম্মূক্ত স্থানের সংস্থান, মানুষ্য বসতি ও প্রকৃতির নৈস্বর্গিক সহাবস্থান, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা, পর্যাপ্ত সবুজের সমারোহ, প্রানবন্ত সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের উপস্থিতি, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এর নিশ্চয়তাবিধানসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ও সহায়ক নীতিনির্দেশনা ও সেসব কার্যকরী করার জন্য কৌশলসমূহ এতে বর্ণিত হয়েছে।।ঢাকাকে একটি আধুনিক, বাসযোগ্য ও আন্তর্জাতিক মানের শহর হিসেবে গড়ে তুলবার লক্ষ্যে এই পরিকল্পনায় প্রস্তাবিত উন্নয়ন ভাবনার মূলে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন রিজিয়নে বিকেন্দ্রীকৃত কাঠামো ব্যবস্থার উন্নয়ন। বর্তমান এক কেন্দ্রীক ধারার বিপরীতে একটি বহুকেন্দ্রিক ব্যবস্থায় পরিনত করার মাধমে অর্থাৎ যেখানে কেন্দ্রিভূতকরণের ধারা শুধু নগর ঢাকার মূল কেন্দ্রের দিকেই ধাবিত, প্রস্তাবিত কাঠামোতে সেই উন্নয়নের আকর্ষক কেন্দ্রগুলো হবে বহুমাত্রিক এবং পূরো মহানগর এলাকায় সুষমভাবে বি¯তৃত। এই পরিকল্পনার সহায়ক নীতিগত সিদ্ধান্ত যা এর বাস্তবায়নের অনুকুল হবে তার মধ্যে আছেঃ

 

  • পুরো ঢাকা মেট্রোপলিটন অঞ্চলকে ৬ টি অঞ্চলে বিভক্তিকরণ। প্রত্যেক অঞ্চলকে স্বয়ংসম্পূর্ন নগর এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য মূল ঢাকা শহরকে কেন্দ্র ধরে প্রতিটি অঞ্চলে বিভিন্ন স্তরের নগর কেন্দ্রª (Urban Centre) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা এবং সেসব কেন্দ্রে নাগরিক সুবিধা ও কর্মসংস্থানের বিকেন্দ্রীকরণ
  • ঢাকা শহরে দ্রুতগামী গণপরিবহন ব্যবস্থা (Mass Rapid Transit, Bus Rapid Transit) এবং চতুপার্শ্বে রিং রোড উন্নয়নের মাধ্যমে মূল শহরের সাথে অঞ্চলসমূহের কার্যকরী সংযোগ স্থাপন
  • ভুমি স্বল্পতাকে বিবেচনায় নিয়ে Planned Unit Development & Compact Development
  • শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো ও পরিকল্পিত শিল্পাঞ্চল বিনির্মানের লক্ষ্যে ঢাকা শহরের চারপাশে Special Economic Zone তৈরী বা Clustered শিল্পাঞ্চল বিনির্মাণ
  • ট্রানজিট স্টেশনগুলোকে কেন্দ্র করে কর্মক্ষেত্রসমুহের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সকলের জন্য আবাসন ব্যবস্থাকরণসহ প্লটের পরিবর্তে Block Hosing Development
  • নদী-নালা, খালবিল ও জলাভুমি সংরক্ষণসহ জলাবদ্ধতা নিষ্কাষন
  • বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতকরণ
  • আকর্ষনীয় গণপরিসর ও উম্মূক্ত স্থানের সংস্থানসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা ও সুবিধাসমুহের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ
  • দূর্যোগ প্রতিরোধে সক্ষমতা অর্জন
  • সকল উন্নয়নে পর্যাপ্ত সবুজের সমারোহ, পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থাসহ সর্বোপরি প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য অক্ষুন্য রাখা ইত্যাদিসহ বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা

 

 

টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (টিএমসি) কর্তৃক অনুমোদনঃ

প্রকল্প তদারকীর জন্যটার্মস অব রেফারেন্স (ToR)  অনুযায়ী টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (টিএমসি) গঠণ করা হয়। ঢাকা শহরের পরিকল্পনা ও উন্নয়নের সাথে যে সকল সরকারী-আধাসরকারী-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সেসকল প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ও পরামর্শ গ্রহনপূর্বক সর্বসম্মত ও যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে RDP প্রকল্পের টিএমসি তে ঐ সকল প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রকল্পের সকল পর্যায় অর্থাৎ ইনসেপশন রিপোর্ট, সার্ভে রিপোর্ট, ইনটেরিম রিপোর্ট এবং ড্রাফট ফাইনাল রিপোর্ট  টিএমসি কর্র্তৃক অনুমোদিত হয়।

 

মতবিনিময় সভা ও গণশুনানীঃ

ড্রাফট ফাইনাল রিপোর্ট প্রণয়নের পূর্বে ঢাকা শহরের উন্নয়ন ও পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা, রিহ্যাব, বিএলডিএ, ব্যবসায়ী সংগঠন, পরিবেশবাদী সংগঠন, নাগরিক সমাজ, ব্যক্তি বিশেষসহ সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন বিধায় ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে রাজউক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক একযোগে মত বিনিময় সভা করা হয়। বিভিন্ন মতবিনিময় সভায় প্রাপ্ত মতামত ও পরামর্শ  গ্রহণপূর্বক ড্রাফট ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫) প্রস্তুত করা হয়। উক্ত ড্রাফট প্ল্যান টিএমসিকর্তৃক অনুমোদনের পরেপরিকল্পনাটিকে আরও অংশগ্রহণমূলক ও বাস্তবসম্মত করার লক্ষ্যে টি আই এ্যাক্টের ৭৩ ধারা অনুযায়ী ৭ জুলাই থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০ দিনব্যাপী এই খসড়া পরিকল্পনার উপর গণশুনানী করা হয়। জনমত গ্রহণ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ ও মতামত পর্যালোচনা করা হয়েছে।

 

জাতীয় সেমিনার ও বিভিন্ন সংস্থা থেকে মতামত গ্রহণঃ

রাজউক যে খসড়া ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান/মহাপরিকল্পনা (২০১৬-২০৩৫) প্রণয়ন করেছে সেটি চূড়ান্তকরণের পূর্বে পরিকল্পনাটিকে আরও অংশগ্রহণমূলক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত করার লক্ষ্যে বিগত ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখ দু’দিনব্যাপি জাতীয় সেমিনার আয়োজন করা হয়। এছাড়া, জাতীয় সেমিনার এর পরে খসড়া এই ঢাকা ষ্ট্রাকচার প্ল্যানের উপর ঢাকা শহরের বিভিন্ন সংস্থা ও পেশাজীবী সংগঠনের মতামত গ্রহণ করার লক্ষ্যে নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কাছে পরিকল্পনার কপি প্রেরণ করা হয়। সেমিনারের মাধ্যমে প্রাপ্ত মতামত ও পরামর্শ এবং বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত অনেক গঠনমূলক সুপারিশ পরিকল্পনাটিকে সমৃদ্ধ করতে যথেষ্ট অবদান রেখেছে।

 

ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান/মহাপরিকল্পনা (২০১৬-২০৩৫) চূড়ান্তকরণঃ

ঢাকা মহানগরীর পরিকল্পিত নগরায়ন নিশ্চিত করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে একটি বাস্তবসম্মত, গ্রহণযোগ্য ও যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে ঢাকা শহরের উন্নয়ন ও পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত সকল সরকারী/বেসরকারী সংস্থার সুপারিশ, বিভিন্ন মতবিনিময় সভায় প্রাপ্ত মতামত, কারিগরী কমিটির সুপারিশ, গণশুনানী এবং জাতীয় সেমিনার থেকে প্রাপ্ত মতামত পর্যালোচনাপূর্বক সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫) প্রস্তুত করা হয়েছে।

 

আন্তঃমন্ত্রণালয় স্টিয়ারিং কমিটি কর্তৃক অনুমোদনঃ

অতঃপর উক্ত স্ট্রাকচার প্ল্যান এর উপর বিগত ১৪-০২-২০১৬ তারিখে সচিব, গৃহায়ন ও গনপূর্ত মন্ত্রনালয়ের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় স্টিয়ারিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় কিছু সিদ্ধান্ত প্রতিপালনের শর্তে ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫) অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।

 

সরকার কর্তৃক অনুমোদন ও গেজেট প্রকাশের জন্যে মন্ত্রণালয়ে প্রেরনঃ

আন্তঃমন্ত্রণালয় স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্তসমূহ প্রতিপালনপূর্বক ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান (২০১৬-২০৩৫) চূড়ান্ত করে অনুমোদন ও গেজেট প্রকাশের লক্ষ্যে রাজউক কর্তৃক বিগত ২৭-০৭-২০১৬ তারিখে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ে প্রেরন করা হয়। অতঃপর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকা ষ্ট্রাকচার প্ল্যানের উপর অনুষ্ঠিত গণ শুনানী ও জাতীয় সেমিনার থেকে প্রাপ্ত মতামত/সুপারিশের অলোকে ষ্ট্রাকচার প্ল্যানে যে সকল বিষয় সংযোজন করা হয়েছে তার তথ্য ও বিদ্যমান ড্যাপের যে সকল সীমাবদ্ধতা ও অসঙ্গতি রয়েছে তার প্রেক্ষিতে চূড়ান্ত ষ্ট্রাকচার প্ল্যানে যে মিটিগেশন মেজার্স নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য বিগত ১৪-০৮-২০১৬ তারিখে রাজউকে পত্র প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে রাজউক কর্তৃক বিগত ১৮-০৮-২০১৬ তারিখে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত প্রত্রের আলোকে ঢাকা ষ্ট্রাকচার প্ল্যানের উপর চাহিত তথ্যের সার সংক্ষেপ/প্রতিবেদন প্রস্তুত করার জন্য পরামর্শক বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়। চাহিত তথ্যের আলোকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এ প্রেরন করা হয়।